ডুমুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং ডুমুর খাওয়ার সঠিক উপায়

8 Nov

ডুমুর তার ঔষধি এবং খাদ্য-বর্ধক বৈশিষ্ট্যের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। কুড়কুড়ে এবং মিষ্টি এই ফলটি বেশ কয়েক বছর ধরে রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ডুমুর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়।

এছাড়াও ডুমুর প্রাচীনকালে মানুষের দ্বারা জন্মানো ফলের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়. শুধু তাই নয়, বাইবেলেও এই ফলটির উল্লেখ আছে। এখন এই একই জিনিস থেকে, আপনি অনুমান করবেন কিভাবে ডুমুর স্বাস্থ্য উপকার করে।

ডুমুর রসালো এবং সজ্জা। ডুমুর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়। ডুমুরগুলি কোষ্ঠকাঠিন্য, সর্দি এবং ফুসফুসের সাথে সম্পর্কিত রোগের চিকিৎসায় উপকারী বলে বিবেচিত হয়।

ডুমুরের প্রভাব

ডুমুরের প্রভাব

ডুমুরের প্রভাব গরম এবং বেশি পরিমাণে সেবন করলে তা শরীরে রক্তক্ষরণও ঘটাতে পারে। FIG ব্যবহার করলে রেটিনাল রক্তপাত, মলদ্বার রক্তপাত এবং হালকা যোনি রক্তপাত হতে পারে এবং হেমোলাইটিক অ্যানিমিয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে। ডুমুর খাওয়ার পরে যদি আপনার মলদ্বার এবং যোনিপথে রক্তপাত হয়, তবে এটি খাওয়া বন্ধ করুন এবং এটি ব্যবহার না করে আপনার রক্তপাত কমেছে কিনা তা দেখুন, যদি না হয় তবে আপনার ডাক্তারের কাছে পরীক্ষা করুন।

ডুমুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা

ডুমুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা

ডুমুরের উপকারিতা উচ্চ গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ কমায়

গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন ডুমুর খাওয়া আপনার অত্যাবশ্যক লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে। ডুমুরে উচ্চ ফাইবার পাওয়া যায় যা অত্যাবশ্যক লক্ষণগুলির বিপদ কমাতে সাহায্য করে, উপরন্তু, ডুমুরে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ রয়েছে যা গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ডুমুরে অতিরিক্ত পরিমাণে পটাসিয়াম এবং অল্প পরিমাণে সোডিয়াম পাওয়া যায়, তাই এর পুষ্টিগুণ উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য এটিকে সেরা করে তোলে। এটি আপনার স্নায়ুকে শান্ত রেখে চাপমুক্ত জীবনযাপন করতে সহায়তা করে।

স্টপ হার্টের অবস্থার জন্য ডুমুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা

করোনারি হার্টের অবস্থা একটি মারাত্মক হার্টের অবস্থা হতে পারে যা বেশিরভাগ রক্তনালীকে শিকার করে রক্ত ​​প্রবাহকে ব্যাহত করে। ডুমুর আপনার রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে এবং আপনার হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। ট্রাইগ্লিসারাইড হল রক্তের মধ্যে উপস্থিত চর্বি কণা যা হৃদরোগের জন্য একটি গুরুতর ব্যাখ্যা। শুকনো ডুমুরে ওমেগা 3, ফেনল এবং ওমেগা -6 ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এই ফ্যাটি অ্যাসিডগুলি করোনারি হার্টের অবস্থার বিপদ কমাতে অত্যন্ত সক্ষম।

ডুমুরের উপকারী গুণাবলী ক্যান্সার থেকে রক্ষা করে

মেনোপজের পরে, হরমোনগুলি প্রায়ই শরীরের মধ্যে ওঠানামা করে এবং এই ওঠানামাগুলি আমাদের সিস্টেমকে প্রভাবিত করে, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির ফ্রি র্যাডিকেলগুলির সাথে লড়াই করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে (ক্যান্সার বিকাশের প্রধান উত্স)। এইভাবে, ডুমুর হরমোনের উপর কাজ করে মহিলাদের মেনোপজের পরে কার্সিনোমা হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।

ডুমুর নিয়মিত সেবনে কার্সিনোমার ঝুঁকি কমে যায়। ডুমুরে উপস্থিত ফাইবার শরীরের মল দ্রুত নির্গমনে সাহায্য করে, যা কার্সিনোমা প্রতিরোধে উপকারী হতে পারে। এমনকি ডুমুরের বীজে উচ্চ মাত্রার শ্লেষ্মা থাকে যা কোলনের মধ্যে জমা মল সংগ্রহ করে এবং ব্যর্থ হতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ডুমুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা

আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের মতে, ডুমুর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে ভালো। ডুমুর পাতা খাওয়া রোগীদের ইনসুলিন ইনজেকশনের উপর নির্ভরতা কমায়। ডুমুর হতে পারে পটাশিয়ামের সমৃদ্ধ উৎস যা শরীরে চিনির শোষণ নিয়ন্ত্রণ করে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রার ওঠানামা বন্ধ করে ঐতিহ্যগত জীবন পরিমাপ করতে সাহায্য করে।

প্রস্রাবের সমস্যার জন্য ডুমুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা

ডুমুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হওয়া উপাদানকে নিয়ন্ত্রণ করে। এটি ক্যালসিয়ামের ক্ষয় রোধ করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়।

চোখের জন্য ডুমুর খাওয়া উপকারিতা

বয়স্কদের চোখের মধ্যে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন খুবই সাধারণ এবং দৃষ্টিশক্তি হারানোর ব্যাখ্যাগুলির মধ্যে একটি। ডুমুর খেয়ে এই প্রতিক্রিয়া হয়। ডুমুরে সর্বাধিক পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায়। তাই এটি আপনার দৃষ্টি প্রসারিত করতে এবং অবক্ষয় বন্ধ করতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ হল একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে ফ্রি র‌্যাডিক্যালের মনোযোগ রক্ষা করে এবং রেটিনার ক্ষতি প্রতিরোধ করে।

ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা গলা ব্যথা উপশম করে

ডুমুর শুধুমাত্র গলার ব্যথা উপশম করে না বরং এটি গলার প্রদাহের চিকিৎসার জন্যও উপকারী। এটি ভোকাল কর্ডের চাপ কমিয়ে ব্যথাও কমায়। এছাড়াও ডুমুর কাশি এবং অন্যান্য সিস্টেমা রেসপিরেটরিয়াম সম্পর্কিত ব্যাধিগুলির চিকিত্সা করতে অত্যন্ত সক্ষম। এটি গলার প্রদাহ এবং জ্বালা কমাতে সাহায্য করে। কুসুম গরম পানিতে ডুমুরের পেস্ট গুলে গলায় লাগান। এটি ব্যথা কমাতে পারে এবং আপনার গলা উপশম করতে পারে।

ওজন কমানোর জন্য ডুমুরের উপকারিতা

ডুমুর ওজন কমাতে অত্যন্ত সহায়ক, এজন্য এটি স্থূল ব্যক্তিদের জন্য এটি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে এটির অত্যধিক খাওয়ার যত্ন নিন কারণ এটি আপনার ওজন বাড়াতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনি এটি দুধের সাথে গ্রহণ করেন।

ডুমুরের উপকারী বৈশিষ্ট্য যৌন রোগের চিকিৎসা করে

ডুমুর ঐতিহ্যগতভাবে এশিয়া উপমহাদেশে যৌন রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। এটি যৌনবাহিত রোগের জন্য একটি সফল চিকিত্সা হিসাবেও বিবেচিত হয়, যদিও গবেষণা এখনও এর ইতিবাচক প্রভাব নিশ্চিত করেনি। এটি পুরুষের ইরেক্টিক্যাল ডিসফাংশনের চিকিৎসায়ও ব্যবহার করা হয়। পৌরাণিক কাহিনীতে, ডুমুরকে একটি শক্তিশালী যৌন সম্পূরক হিসাবে দেখা হয়। যৌন শক্তি বাড়াতে ২-৩টি ডুমুর সারারাত দুধে ভিজিয়ে রেখে সকালে খাবেন। এটি প্রজনন স্বাস্থ্যও বাড়ায়। গর্ভাবস্থায় ডুমুর যেমন মিষ্টি, তেমনি গর্ভবতী মহিলাদের আয়রনের ঘাটতিও পূরণ করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ডুমুর ব্যবহার করুন

ডুমুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার পাওয়া যায়। একটি মাঝারি আকারের (50 গ্রাম) ডুমুরে রয়েছে 1.45 গ্রাম ফাইবার, যা শুধুমাত্র কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে না বরং এটি প্রতিরোধ করে। দু’টি ডুমুর সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে এবং সমপরিমাণ পানি পান করলে পেট পরিষ্কার হয়। ডুমুর খেলে ডায়রিয়াও এড়ানো যায়। ডুমুর হজম শক্তির উন্নতি ঘটায় এবং এর সাথে সম্পর্কিত সমস্যা দূর করে।

হাড়ের জন্য ডুমুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা

ডুমুর ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ যা হাড় মজবুত করার জন্য সবচেয়ে বেশি উপাদান। এটি খাওয়া অস্টিওপোরোসিসের মতো হাড়ের রোগ থেকেও রক্ষা করে। যেহেতু এটি ফসফরাসের একটি উচ্চতর উৎস, তাই এটি হাড়ের প্রসারণ বাড়ায় এবং তাদের পতন রোধ করে।

কোলেস্টেরল কমাতে ডুমুরের উপকারিতা

ডুমুরে পেকটিন নামক দ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকরী। ডুমুরের ফাইবার আপনার গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সিস্টেমের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল পরিষ্কার করে এবং এটি নির্মূল করতে অন্ত্রে কোলেস্টেরল বহন করে। শুকনো ডুমুর সামগ্রিক কোলেস্টেরল কমায় কারণ এতে ওমেগা-৩, ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ফাইটোস্টেরল রয়েছে যা শরীরের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে। ডুমুরে রয়েছে ভিটামিন বি৬ যা শরীরে সেরোটোনিনের সমাবেশ ঘটায়। এই সেরোটোনিন আপনার মেজাজ উন্নত করে এবং কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

ডুমুর খাওয়ার উপায়

ডুমুর খাওয়ার উপায়

ডুমুর ভাল খাবার যা একা খাওয়া বা প্রাতঃরাশের অন্তর্ভুক্ত। আপনি এটিকে সালাদে কেটেও খাবেন। ডুমুর বিশেষভাবে মিষ্টি খাবার, জ্যাম, স্মুদি এবং মিষ্টি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। টিনজাত ডুমুর খেতে ভালো নয় কারণ এতে আলাদা চিনি থাকে। শুকনো এবং তাজা ডুমুর উভয়েরই স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। তাজা ডুমুরে ক্যালোরি কম থাকে। আপনার প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে, আপনার শুকনো বা তাজা ডুমুর খাওয়া উচিত। শুকনো ডুমুর ভিজিয়েও খাওয়া যায়। তিন বা চারটি শুকনো ডুমুর ধুয়ে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এগুলি সকালে খালি পেটে খান এবং ভিজিয়ে রাখা জল পান করুন। সকালে ভিজিয়ে ডুমুর খেলে পিত্ত প্রশমিত হয় এবং হজমশক্তি ভালো হয়। ডুমুর দুধের সাথেও খাওয়া যেতে পারে। প্রতিদিন 2 থেকে 3টি ডুমুর খাওয়ার চেষ্টা করুন।

ডুমুর খাওয়ার সঠিক সময়

আপনি যে কোনও সময় হালকা ওজনের খাদ্য হিসাবে ডুমুর ব্যবহার করতে পারেন, তবে ডুমুর খাওয়ার সবচেয়ে সহজ সময়টিকে সকাল হিসাবে বিবেচনা করা হয়। সকালের মধ্যে ডুমুর ব্যবহার আপনার শরীরের জন্য আরও উপকারী। অন্ধকারে ডুমুর ব্যবহার করা উপকারী বলে মনে করা হয় না।

ডুমুরের অসুবিধা

ডুমুরে রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান যা ত্বক, চুল এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কিন্তু ডুমুরের অত্যধিক সেবনের ফলে অনেক ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, তাই এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে আপনার এটি যথাযথ পরিমাণে খাওয়া উচিত

  • ডুমুর খাওয়ার ফলে অনেক সময় ডায়রিয়া হয়।
  • শুকনো ডুমুরে চিনি বেশি পরিমাণে পাওয়া যায় যা আপনার দাঁত পচে যেতে পারে।
  • আপনার ডুমুর থেকে অ্যালার্জি হবে, তাই প্রাথমিক সময়ের জন্য সেগুলি অল্প পরিমাণে খান।
  • এক সপ্তাহে অনেক বেশি ডুমুর খাওয়ার ফলে আপনার গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সিস্টেমে রক্তপাত হতে পারে।
  • ডুমুরের অতিরিক্ত খাওয়া প্রায়ই পেটে ভারী হয় যা পেটে ব্যথা হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *