লক্ষ্য অর্জনের সহজ উপায়

11 May

সফলতা অর্জনের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অলমোস্ট প্রত্যেকটা ছেলে-মেয়ের ছোটবেলায় শোনা কমন প্রশ্ন তুমি বড় হয়ে কি হতে চাও? যখন আমাদের টিচার অথবা অন্য কেউ আমাদেরকে জিজ্ঞেস করত এরকম প্রশ্ন আমরা কিছু না কিছু একটা বলে দিতাম। খুব ছোটবেলায় আমরা কিন্তু আসলে জানতাম না আমরা যা বলছি তা আসলে আমরা কিভাবে অর্জন করব আর বিষয়টা আসলেই প্রকৃতপক্ষে কি।শুধু ছোটবেলায় নয় ম্যাচিওর হওয়ার পরেও ভবিষ্যতের দিনগুলোর জন্য আমরা অনেক সময় অনেক লক্ষ্য ঠিক করে। অনেক সময় আমাদের জানা থাকে না আমাদের ঠিক করা লক্ষ আমরা কিভাবে অর্জন করতে পারি। আসলে কোনো লক্ষণ ঠিক করার থেকে ওই লক্ষ্য অর্জন করাটাই প্রকৃত অর্থে সফলতা এবং এই বিষয়টাই অনেক কঠিন।সম্পন্ন আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি এমন কিছু টিপস জানতে পারবেন যেগুলো ফলো করে আপনি আপনার গোল আপনি আপনার লক্ষ্য লক্ষ্য অর্জনে দিকে অনেক দূর এগিয়ে যাবেন।

একসাথে অনেক লক্ষ্য ঠিক করা

ওই বিষয়টি হয়তো আপনার সাথে অনেকবার হয়েছে। আপনি চিন্তা করলেন ওই নির্দিষ্ট সময়ের পর থেকে এটা ওটা মিলিয়ে অনেক কিছু করবেন। একটা – দুইটা করে হিসেব করতে করতে দেখলেন বেশ কয়েকটি কাজ করে ফেলবেন বলে ভেবে ফেলেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে যখনই ওই নির্দিষ্ট সময় চলে যায়। আর যখন আপনি হিসেব করে দেখেন আপনি যা যা করবেন বলে ঠিক করেছেন মোটামুটি তার কিছুই করা হয়নি ঠিক তখনই আপনি হতাশ হয়ে পড়েন। যখন আপনি চিন্তা করছেন আগামী কিছুদিনের ভিতর অনেক গুলা কাজ করে ফেলবেন তখন আপনার ভিতরে কাজ করার এনার্জি থাকে।হয়তো মনে মনে আপনি শিডিউল তৈরি করে ফেলছেন কোনটার পর কোনটা করবেন। কিন্তু যখনই আপনি কাজ শুরু করেন তখনই বুঝতে পারেন,একই সাথে অনেকগুলো কাজ সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে করা সম্ভব না। কিন্তু তার মানে এই নয় যে পুরা জীবনে আপনার শুধু একটিমাত্র গোল থাকবে। আমাদের জীবনে যেমন ভিন্ন ভিন্ন দিক আছে ঠিক তেমনই জীবনের ভিন্ন ভিন্ন গোল থাকতেই পারে। মনে করুন আপনি আপনার স্বাস্থ্য বিষয়ক কোনো গোল ঠিক করেছেন আপনি ঠিক করেছেন, আগামী 6 মাসের ভিতর আপনি 10 কেজি ওজন কমাবেন অথবা বাড়াবেন,এরকম লক্ষ আপনি রাখতে পারেন।আবার আপনি আপনার ব্যবসার জন্য আলাদা একটা গোল ঠিক করলেন, আপনি ঠিক করলেন এই বছরের তুলনায় আপনি আগামী বছর 20 পার্সেন্ট এক্সট্রাম প্রফিট করবেন।

লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য এর ভিতর পার্থক্য

এই পয়েন্টটি আপনার কাছে একটু কনফিউজিং মনে হতে পারে।উদ্দেশ্য কিছুটা ওইরকম, আপনি চিন্তা করলেন জীবনে আপনাকে অনেক টাকা পয়সা ইনকাম করতে হবে আপনাকে অনেক বড়লোক হতে হবে।আর লক্ষ এমন একটা জিনিস যা অর্জন করার জন্য আপনি একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা ঠিক করেন এবং কিছু স্টেপ ফলো করার মাধ্যমে আপনি আপনার লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন। লক্ষ ঠিক করে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাবার বিষয়টা আপনি অনুভব করতে পারবেন, আপনি বুঝতে পারবেন আপনি আপনার লক্ষ্য অর্জনের দিকে কতটুকু এগিয়ে যাচ্ছেন। আর কোন কোন স্টেপ ফলো করার মাধ্যমে আপনি আপনার লক্ষে পৌছাতে পারবেন। উদ্দেশ্য অনেকটা স্বপ্নের মত কল্পনা করতে এবং শুনতে ভালই লাগে । মনে করুন সামনের মাসে আপনি 50,000 টাকা আয় করতে চান কোন কিছু বিক্রি করার মাধ্যমে এটা অনেকটাই স্পেসিফিক লক্ষ,এটি একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য আপনি যদি কিছু স্টেপ ফলো করে এগিয়ে যেতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন। আপনার জীবনের উদ্দেশ্য থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যদি আপনার জীবনে কোন স্বপ্ন থাকে তাহলে আপনি কাজ করার অনুপ্রেরণা পাবেন। কিন্তু শুধু স্বপ্ন থাকলেই আপনার লক্ষ্য অর্জন হয়ে যাবে না লক্ষ্য অর্জনের জন্য স্টেপ বাই স্টেপ পদক্ষেপ নিতে হয়।

কন্ট্রোলিং বিষয়ের উপর ফোকাস করা

ফোকাস করা

মনে করুন আপনি ঠিক করেছেন সামনের পরীক্ষায় কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে 100 তে 100 পাবেন।আর সেটি পাওয়ার জন্য অনেক পরিশ্রম করলেন, বেশীরভাগ সময় এই বিষয়টা আপনার কন্ট্রোলে থাকবে না। সবকিছু ঠিকঠাক লেখার পরেও শিক্ষক যেকোনো মুহূর্তে আপনার নাম্বার পরিবর্তন করে দিতে পারে ইচ্ছাকৃতভাবে অথবা অনিচ্ছাকৃতভাবে। পরিশেষে বিষয়টা নিয়ে আপনি হতাশ হবেন। যদি আপনি আপনার গোল টাকে একটু পরিবর্তন করে রাখেন এবং আপনি প্রতিদিন কমপক্ষে 3-4 ঘন্টা ওই নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর সময় দিয়ে ওই বিষয়ে সম্পূর্ণ খুঁটিনাটি আয়ত্ত করতে পারেন তাহলে বলা যায় কোনভাবে আপনি হতাশ হবেন না, আপনার ভিতরে কনফিডেন্স থাকবে। আপনাকে শুধু আপনার কন্ট্রোলে থাকে এরকম বিষয়ের উপর ফোকাস করা উচিত।

যত দ্রুত সম্ভব শুরু করুন

দ্রুত শুরু করা

লক্ষ্য অর্জনের সবথেকে এফেক্টিভ উপায় হচ্ছে লক্ষ্য অর্জনের জন্য যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করে দেয়া, আপনি যদি মনে করেন একদম একশভাগ পারফেক্ট হয়ে,সবকিছু গুছিয়ে কাজ শুরু করবেন সম্ভবত কাজটা কখনোই শুরু করা হবে না। কারণ একশভাগ গুছিয়ে কাজ করাটা প্রায় অসম্ভব বরং আপনি কাজ শুরু করে আস্তে আস্তে গুছিয়ে নিতে পারবেন। সুতরাং লক্ষ্য অর্জনের জন্য যত দ্রুত সম্ভব হয় কাজ শুরু করে দিন। কোনভাবেই আজকের কাজ আগামী দিনের জন্য ফেলে রাখা যাবে না। কোনভাবেই এক্সকিউজ দেয়া যাবে না সামনের মাস থেকে শুরু করব, যদি সত্যিই বড় কোনো কারণ অথবা সমস্যা না থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার দ্রুত শুরু করা উচিত।

নিজেকে উপহার দিন

উপহার

মনে করুন আপনি অন্য কারো আন্ডারে কাজ করছেন আপনার বস আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট কাজ দিয়ে বলল আগামী এক সপ্তাহের ভিতরে আপনি যদি কাজগুলো সম্পন্ন শেষ করতে পারেন তাহলে আপনাকে মাস শেষে বাড়তি দুইদিন ছুটি দেয়া হবে। এই বিষয়টা আপনার কাজ করার গতি অনেকটাই বাড়িয়ে দিবে, যদি বস আপনাকে 10 দিনের কাজ সাতদিন ও করে ফেলতে বলে আপনি হয়তো করে ফেলবেন ,কারণ আপনার বাড়তি দুইদিন ছুটি পাওয়ার ইচ্ছে থেকে। এটা আপনি আপনার কাজের উপহার হিসেবেও নিতে পারেন অথবা বসের একটি টেকনিক হিসেবেও। ঠিক এমনিভাবে আপনি যখন আপনার গোল নিয়ে কাজ করবেন আপনি একটা মাইলস্টোন ঠিক করে দিতে পারেন, যেমন 30% কাজ এত দিনের ভিতরে করতে পারলে নিজেকে একটা নির্দিষ্ট গিফট দেবেন, এতে করে কাজ করার এনার্জি কাজ করার উদ্দীপনা অনেক বেড়ে যায়, আর কাজ করার এনার্জি উদ্দীপনা যখন বেড়ে যাবে তখন লক্ষ্য অর্জন করাটা অনেক সহজ হয়ে যাবে আপনার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *